romantic dialouge, best songlap, novel, awesome story, love story, romantic story, sad story, sad solution, love solution, poem,
বর যখন ভ্যাম্পায়ার
রাত ১২.০০ টা
গভির ঘুমে ঘুমিয়ে আছে চাঁদনী। জানালার কাঁচটা সরিয়ে আস্তে করে রুমে ঢুকলো শ্রাবন। তারপর সোজা গিয়ে চাঁদনীর মুখোমুখি বসে তাকিয়ে রইলো চাঁদনীর দিকে। চাঁদনীর ঘুমন্ত মুখটা কেমন নিশ্পাপ লাগছে দেখতে। চাঁদনীর দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছে শ্রাবন। শ্রাবনের চোখ থেকে এক ফোটা পানি গড়িয়ে চাঁদনীর হাতের ওপর গিয়ে পরলো। শ্রাবন সেটা খেয়াল করেনি। হাতে পানি পরতেই চাঁদনী ঘুমের ঘোরে বলে উঠলো
-- কান্না করছেন কেনো এভাবে? আমার তো কিছু হয়নি আমি তো ঠিক আছি।
চাঁদনীর কথা শুনে অবাক হলো শ্রাবন। শ্রাবন বুঝতে পারছে না যে চাঁদনী ঘুমের ঘোরে কথা বলছে নাকি জেগে আছে। শ্রাবনকে অবাক করে দিয়ে চোখ মেলে তাকালো চাঁদনী। তারপর শ্রাবনের চোখের পানি মুছে দিয়ে উঠে বসে বললো
-- এভাবে কাঁদছেন কেনো?
-- তু তুমি জেগে ছিলে চাঁদনী?
-- হুমম, কারন আমি জানতাম আপনি আসবেন। তাই আপনার জন্যেই জানালার কাঁচটা না লাগিয়ে ঘুমের ভাব করে শুয়ে ছিলাম।
-- তুমি কি করে জানলে আমি আসবো?
-- কারন আমি জানি আপনি গত কয়েকদিন হলো প্রতিদিন রাতেই আমার রুমে আসেন। আর সারারাত ধরে আমার দিকে হা করে হ্যাবলার মতো তাকিয়ে থাকেন। কিন্তু আপনি এমন কেনো করেন শ্রাবন?
চাঁদনীর কথা শুনে অবাক হয়ে কিছুক্ষণ চাঁদনীর দিকে তাকিয়ে রইলো শ্রাবন। তারপর কিছু না বলেই আচমকা চাঁদনীকে জরিয়ে ধরলো। চাঁদনী যেনো এতে একটুও অবাক হলো না। বরং মুচকি হেসে চাঁদনী বললো
-- কি হই আমি আপনার যে আমার জন্যে আপনার চোখে পানি আসে। আমি না সব সময় আপনার সাথে ঝগড়া করি।তাহলে এত কেনো ভাবেন আপনি আমায় নিয়ে? কেনই বা প্রতিদিন রাতে এসে আমার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকেন?
-- কারন আমি তোমায় ভালবাসি চাঁদপাখি খুব বেশি ভালবাসি আমি তোমায়।
শ্রাবনের কথা শুনে মুচকি হাসলো চাঁদনী। কিন্তু শ্রাবনকে কিছু বুঝতে না দিয়ে মুখটাকে রাগি লুক বানিয়ে শ্রাবনের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চাঁদনী বললো
-- ভালবাসেন মানে কি হুমম? আর কবে থেকে ভালবাসেন আপনি আমায়?
মুহুর্তেই চাঁদনীর রুপের এমন পরিবর্তন দেখে অবাক হলো শ্রাবন। তারপর কিছু একটা ভেবে চাঁদনীকে অবাক করে দিয়ে চাঁদনীর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো শ্রাবন। তারপর বাকা হেসে বললো
-- আমি আমার চাঁদপাখিকে তখন থেকে ভালবাসি যখন থেকে আমার চাঁদপাখি আমায় ভালবাসে মনে মনে। কিন্তু সব সময় ঝগড়ার আড়ালে সেই ভালবাসা লুকিয়ে রাখে।
-- আ আমি আ আপনাকে ভালবাসি মা মানে? কে বলেছে আপনাকে এই কথা?
-- কেউ বলেনি, আমি জানি চাঁদপাখি তুমি আমায় ভালবাসো। এতদিন শিওর ছিলাম না। কিন্তু আজকে তোমার আচরনে শিওর হয়ে গেলাম।
শ্রাবনের কথা শুনে শুকনো ঢোক গিলে চাঁদনী মনে মনে বললো
-- আমি আবার কেমন আচরন করলাম যে এই ফাজিলটা আমার মনের কথাটা ধরে ফেললো?মনে মনে
-- বিয়ে করবে আমায় চাঁদপাখি?
হঠাৎ শ্রাবনের মুখে বিয়ের কথা শুনে চমকে উঠলো চাঁদনী। তারপর বিস্ফারিত চোখে শ্রাবনের দিকে তাকালো। শ্রাবন উঠে বসে চাঁদনীর গালে নিজের হাত রেখে বললো
-- বিয়ে করবে আমায় চাঁদনী? তোমাকে ছাড়া যে আর নিজেকে ভাবতে পারছি না আমি। হবে আমার আগামি দিনের পথ চলার সাথী? কথা দিচ্ছি নিজের সব টুকু ভালবাসা দিয়ে আগলে রাখবো আমি তোমায়।
শ্রাবনের কথা শুনে নিজের গালে রাখা শ্রাবনের হাতের ওপর হাত রাখলো চাঁদনী। তারপর শ্রাবনের দিকে তাকিয়ে হালকা লজ্জামাখা হাসি দিয়ে মাথা নিচু করে বললো
-- হুমম, আপনি আপনার ফ্যামিলি নিয়ে আব্বুর কাছে প্রস্তাব পাঠান আমি আপনাকেই আমার জীবন সঙ্গিনী করতে চাই।
-- না চাঁদনী আমি তোমার আব্বুর কাছে প্রস্তাব পাঠাতে পারবো না। আর না তোমায় সবার সামনে বিয়ে করতে পারবো।
-- ঠিক বুঝলাম না শ্রাবন? আপনি কি আমায় ভালবাসেন না? বউ করে পেতে চান না?
-- চাই চাঁদপাখি খুব খুব খুব বেশি করে চাই। কিন্তু আমাদের বিয়েটা আমরা প্রকাশ করতে পারবো না।
-- কিন্তু কেনো?
-- সব কেনোর উত্তর দেওয়া সব সময় সম্ভব হয়না। আমি তোমায় বিয়ে করবো কিন্তু সবার আড়ালে এমন কি তোমার পরিবারের কেউই আমাদের বিয়ের ব্যাপারে জানবে না।
-- এটা কখনোই সম্ভব নয় শ্রাবন। আমি আমার বাবা মাকে না জানিয়ে কখনোই আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না।
চাঁদনীর কথা শুনে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে রইলো শ্রাবন। তারপর চাঁদনীর দিকে তাকিয়ে নরম শুরে বললো
-- এখন ঘুমিয়ে পড়ো চাঁদপাখি আমি চলে যাচ্ছি। কাল কলেজে কথা হবে এ বিষয়ে।
কথাটা বলেই চাঁদনীকে আর কিছু বলার সুজোগ না দিয়েই জানালা দিয়ে চলে গেলো শ্রাবন। আর চাঁদনী হা করে তাকিয়ে রইলো শ্রাবনের চলে যাওয়ার দিকে।
শ্রাবন চলে যেতেই চাঁদনী একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিজের টেডিবিয়ারটা জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো।
,
,
সকাল ৮.০০ টা
চাঁদনীর আম্মু কিচেনে সকালের ব্রেকফাস্ট বানাতে ব্যাস্ত। হঠাৎ চাঁদনী গিয়ে ওর মাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো। মেয়ের এমন কান্ড দেখে অবাক হয়ে চাঁদনীর আম্মু বললো
-- কি ব্যপার, আজকে সূর্য কোন দিক থেকে উঠেছে? আমার দুষ্টুরানীর তার আম্মুর প্রতি এত ভালবাসা?
-- ওহ আম্মু তুমিও না? কোথায় জিগ্যেস করবে আমার কি চাই তা না তুমি যা তা বলে যচ্ছো।
-- হুমম কিছু যে চাই সেটাতো বুঝতেই পেরেছি কিন্তু কি চাই শুনি যার জন্যে আমার মেয়ের আজকে এত আদর আমার প্রতি??
আম্মুর কথা শুনে লজ্জামাখা মুখ করে চাঁদনী বললো
-- আম্মু আমি একজনকে ভালবাসি। আর সেও আমায় ভালবাসে।
-- হা হা হা সকাল সকাল এমন জোক্স বলতে এসেছিস তুই চাঁদ। তুই কাউকে ভালবাসিস আর তোকেও কেউ ভালবাসে এটা বিশ্বাস করা যায়? তুই শুধু দুষ্টুমি আর ঝগড়াই করতে পারিস প্রেম নয়।
-- আজব তো, বিশ্বাস করা যায় না কেনো শুনি? আম সিরিয়াস আম্মু, আমি সত্যিই একজনকে ভালবাসি আর ওর নাম শ্রাবন। আমাদের কলেজেই পড়ে ও।
চাঁদনীর কথা গুলো এবার সিরিয়াসলি নিলো ওর আম্মু। তারপর একটু নরম হয়ে বললো
-- কত দিন হলো চলছে তোদের রিলেশন?
-- দুদিন,,,
-- কিইইইই মাত্র দুদিনের রিলেশনেই তোরা বিয়ে করতে চাইছিস? তোর কি মাথা খারাপ হয়েছে চাঁদ। এত তারাতারি কোনো সম্পর্ক হয়?
-- আরে আম্মু তুমি এত হাইপার হচ্ছো কেনো। আগে আমার কথাগুলো তো সব শুনবে নাকি? শ্রাবনের আমার ভালবাসার সম্পর্ক দুদিন। তবে আমরা একে অপরকে আগে থেকেই চিনি, শ্রাবনই সেই ছেলে যে দুই দুবার আমায় ভয়ানক এক্সিডেন্ট এর হাত থেকে বাচিয়েছে,,,,,,,
তারপর চাঁদনী ওর আম্মুকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কিছু খুলে বললো। সব শুনে চাঁদনীর আম্মু বললেন
-- হুমম তোর কথা শুনে তো মনে হচ্ছে ছেলেটা তোকে সত্যিই ভালবাসে চাঁদ। তবুও আমি শিওর হতে চাই। কারন বিয়েটা কোনো খেলনা নয় এর সাথে জরিয়ে আছে সারাজীবনের সুখ দুঃখ ও ভবিষ্যৎ। তুই আজ বিকেলে একবার শ্রাবনকে নিয়ে আয় বাসায় আমি ওর সাথে কথা বলতে চাই।
আম্মুর কথা শুনে আম্মুকে জরিয়ে ধরলো চাঁদনী। তারপর আম্মুর গালে চুমু একে দিয়ে বললো
-- ওওও আমার সোনা আম্মু ভালো আম্মু লক্ষি আম্মু। আমি বিকেলেই ওকে নিয়ে আসবো বাসায়।
তারপর সকালের ব্রেকফাস্ট শেষ করে তারাতারি কলেজে চলে গেলো চাঁদনী,,,,,
COMMENTS