romantic dialouge, best songlap, novel, awesome story, love story, romantic story, sad story, sad solution, love solution, poem,
বেখেয়ালি মন --- ৮ম পর্ব
লেখাঃ-আফরিন ইভা
"কিছু বলছো না কেনো সোনা বউ?"
.
.
.
হা হা হা হা ভেবোনা কথাগুলো আমি তোমাকে বলেছি, এগুলো আমি আমার মনের রানী ইরাকে বলবো। ওকে না আমার হেব্বি লাগে, সেই স্কুল জীবন থেকে ওকে আমি অনেক পছন্দ করি। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হলো, আমি যখন ক্লাস সেভেনে পড়ি, ও সিক্সে পড়ে। একদিন বৃষ্টিভেজা সকালে সবাই স্কুলে যাচ্ছিলো, ইরাও যাচ্ছিলো কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত ইরা পা পিছলে পড়ে যায়।
আমার সাথের বন্ধুরা সবাই হু হু হু করে হেঁসে উঠলো সাথে আমিও।
পরদিন আমি যখন প্রপোজ করতে গেলাম তা-ও গাধা ফুল নিয়ে।
ইরা ওর ভালোবাসা পানের বিড়ায় ঢুকিয়ে আমাকে কী বললো জানো?
আমি অবাক হয়ে উনার স্নিগ্ধ চোখের দিকে তাকালাম।
"আপনিতো আসলেই গাধা, ঐ দিন আমি যখন ব্যাথা পেলাম, আপনি তখন তো বত্রিশটা দাঁত কেলিয়ে হাসছিলেন মনে আছে? গাধা হয়ে আমাকে আসছেন গাঁদা ফুল দিয়ে প্রপোজ করতে?
পরদিন আমি যখন প্রপোজ করতে গেলাম তা-ও গাধা ফুল নিয়ে।
ইরা ওর ভালোবাসা পানের বিড়ায় ঢুকিয়ে আমাকে কী বললো জানো?
আমি অবাক হয়ে উনার স্নিগ্ধ চোখের দিকে তাকালাম।
"আপনিতো আসলেই গাধা, ঐ দিন আমি যখন ব্যাথা পেলাম, আপনি তখন তো বত্রিশটা দাঁত কেলিয়ে হাসছিলেন মনে আছে? গাধা হয়ে আমাকে আসছেন গাঁদা ফুল দিয়ে প্রপোজ করতে?
ইচ্ছে করছে জুতা দিয়ে আপনার নাকখানা ভোঁতা করে দিতে।"
"কথাটা শুনে আমি হালকা কেশে উঠলাম।"
তারপর থেকে লজ্জায় আমি আর ওর সাথে কোনো কথা থাক দেখাও করিনি।
"কথাটা শুনে আমি হালকা কেশে উঠলাম।"
তারপর থেকে লজ্জায় আমি আর ওর সাথে কোনো কথা থাক দেখাও করিনি।
_________
"আমি শিশির ভাইয়ের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছি। খালা মনির কথা খুব মনে পড়ছে, খালা মনি তো ঠিকই বলেছিলো একসময় আমি জেগে জেগে ঘুমবো, কিন্তু এখন তো দেখছি আমি আরো আপডেট হয়েছি,জেগে জেগে স্বপ্ন দেখাও শুরু করেছি। কয়েকদিন পর তো চোখেও ভুল দেখবো, রাতে সূর্য উঠেছে, দিনে চাঁদ উঠেছে, হায় আল্লাহ এখন কী হবে আমার!
এই ভোরের শিশির মনে হয় আমাকে পাগল করা ছাড়া শান্তি নেই। উনি ইরা না পানের বিড়ার কথা আমাকে বলছে কেনও, ইরা কে ইরাক পাঠিয়ে দিক যুদ্ধ করতে তাতে আমার কী ফালতু।
শুনো না প্রিয়ন্তী, ইরা না আবার ফিরে এসেছে। এবার আমি ওকে হাতছাড়া করতে চাই না। দরকার হলে ওর নানি, দাদির সাথে প্রেম করে হলেও রাজি করাবো ওকে।
শুনো না প্রিয়ন্তী, ইরা না আবার ফিরে এসেছে। এবার আমি ওকে হাতছাড়া করতে চাই না। দরকার হলে ওর নানি, দাদির সাথে প্রেম করে হলেও রাজি করাবো ওকে।
তাই ভাবলাম তুমি থাকতে আয়নার সামনে কেনো প্রেকটিস করতে যাবো? তুমি তো আয়নার চেয়েও ভালো। আয়না তো আর কথা বলতে পারে না,আর কিছু পারো আর না পারো, অন্তত এটা পারো সারাক্ষণ মুখে খই ফোটাতে।
তো এখন বলো এভাবে প্রপোজ করলে ইরা ইমপ্রেস হবে তো?
আমি শিশির ভাই কে ভাবলেশহীন ভাবে বললাম, আরে শিশির ভাই আপনি তো খুবি জিনিয়াস, আপনি এই কথা গুলো যদি আমার সামনে না বলে, আয়নার সামনে বলতেন আয়না লজ্জা পেয়ে এতোক্ষণে ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যেতো। আপনার এই কথাগুলো শুনে ইরা কেনও ইরার, নানি, দাদি, চাঁচি, মামী সবাই ছুটে চলে আসবে।
যদিও কথাগুলো হাসিমুখে বলছি আমি কিন্তু কষ্টে হৃদয় আমার দগ্ধ হতে শুরু করেছে।
_____________
হায়, আল্লাহ এতো জনকে দিয়ে আমি কী করবো? আমার তো কোন পাহারাদারও লাগবে না। আমার শুধু ইরাকে চাই।
আমিতো মনে মনে সে-রকম রেগে আছি, ইচ্ছে করছে শিশির ভাইয়ের এই ইরাকে সাপের বিড়া বানিয়ে নাগিন ডান্স নাচাতে।
তবে মনে মনে একটু খুশিও লাগছে,একজন যে, শেষমেশ শিশির ভাইয়ের মতো এতো স্মার্ট বজ্জাতকে আলুভর্তা বানিয়ে ছাড়লো।
শিশির ভাই বললো ঠিক আছে দোয়া করো আগামীকাল যেনো ইরা আমার প্রেমে পরে যায়, ইরার মনে যেনো আমার জন্য বসন্ত ফুল ফুটে।
আমি মনে মনে বললাম, আপনার বিড়ার মনে ফুল ফুটক না কাঁটা ফুটক, আর সেই কাঁটা আপনার গলায় বিঁধুক তাতে আমার কী?
আচ্ছা প্রিয়ন্তী বলোতো ইরাকে আরো কিভাবে ইমপ্রেস করা যায়?
আমি মনে মনে বললাম আপনি আপনার বিড়া কে , পাগলের মতো গান গেয়ে, নাকি ছাগলের মতো নেচে-কুঁদে প্রপোজ করুন তাতে আমার কী? আমি স্বাভাবিক ভাবে বললাম, ইরার মনে যদি আপনার জন্য বিন্দু পরিমান ভালোবাসা থেকে থাকে তাহলে আপনি যেভাবেই প্রপোজ করেননা কেনও উনি আপনার ডাকে সাড়া দিবেই।
শিশির ভাই খুশিতে আকুপাকু হয়ে আমাকে গুড নাইট বলে চলে গেলো।
আমি শিশির ভাইয়ের দিকে ক্যাবলাকান্তের মতো তাকিয়ে রইলাম। হঠাৎ এক আশ্চর্য জিনিস অনুভূত হলো, আমার চোখের কোণ বেয়ে একফোঁটা অশ্রুজল গড়িয়ে পড়লো।
হয়তো শিশির ভাই কে আজ আমি বেখেয়ালি মনে ভালোবেসে ফেলেছি,নয়তো এটা আমি ভুল ভাবছি।
এই লোকটা আসলেই আজিব, কখনো মানুষকে হাসাবে, কখনো কাঁদাবে, কখনো হৃদয়ের গহীন অনুভূতি তে নিয়ে গিয়ে বলবে এই তুমি এখানে কেনও এসেছো।
এই লোকটা আসলেই আজিব, কখনো মানুষকে হাসাবে, কখনো কাঁদাবে, কখনো হৃদয়ের গহীন অনুভূতি তে নিয়ে গিয়ে বলবে এই তুমি এখানে কেনও এসেছো।
হাহাহাহা উনি পারেও বটে।
আমিও মনকে কোনো রকম বুঝিয়ে ঘুমুতে গেলাম।
চোখেও আজ রাজ্যভরা ঘুম এসে ধরা দিলো।
_________________
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তার টেবিলে এসে দেখি জিজু, আন্টি,আপু নাস্তা করতে বসেছে। কিছুক্ষণের মধ্যে সবার চোখ কপালে। শিশির ভাই এমন গেটআপ নিয়েছে, যেনো উনি শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছেন। ব্ল্যাক শার্ট, ব্রান্ডের ঘড়ি, ব্রান্ডের সুজ, সিল্কি চুল গুলো স্পাইক করা, যেনো হিরো এককথায় অসাধারণ। জিজু জিজ্ঞেস করলো কিরে তোকে দেখে তো মনে হচ্ছে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিস?
শিশির ভাই স্বাভাবিকভাবে উত্তর দিলেন, আমার স্টাইল দেখেও কী বুঝতে পারছোনা কোথায় যাচ্ছি?
বুঝতে তো পেরেছি ভাই শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছো, তা তোর বউ কোথায় , বউ ছাড়া বুঝি হ্যাংলার মতো শ্বশুরবাড়ি চলে যাবি?
শিশির ভাই ইনোসেন্ট ভাব নিয়ে বললো, ওহ্ ভাই আজ তোমার বউ থাকাতে আমাকে ধাক্কা মেরে কথা বলছো, আমার বউ আসুক, আমি আর আমার বউ মিলে তোমাকেও পাক্কা ধাক্কা মারবো।
ওকে নো প্রবলেম আগে তুই বউ নিয়ে আয় তারপর চাপাবাজি করিস।
আমার তো ইচ্ছে করছে শিশির ভাইয়ের বউয়ের চুলগুলো ছিঁড়ে আগুনে পুড়িয়ে ফেলি।
শিশির ভাই পাউরুটিতে আমের জেলি লাগিয়ে খুশিমনে এমনভাবে খাচ্ছে যেনো উনি এমন পাউরুটি আর জেলি জীবনেও চোখে দেখেন নি।
আমার তো ইচ্ছে করছে শিশির ভাইকে পাউরুটিতে কেঁচোর জেলি লাগিয়ে খাইয়ে দিতে, আরো ইচ্ছে করছে জেলি টা উনার শার্ট, প্যান্টে ফেলে উনাকে ডাস্টবিন বানিয়ে দিতে।উঁহু কী ঢং ইরা না বিড়ার সাথে দেখা করতে যাবে তাও আবার এতো সাজগোজ করে, একটু লিপস্টিক, একটু কাজল লাগিয়ে দিলে আরো বেশি সুন্দর লাগতো।
শিশির ভাই তারাতাড়ি নাস্তা কমপ্লিট করে চলে গেলো।
আমিও উনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
___________
দুপুরের রান্নার জন্য আপু সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, আমিও আপুকে হাতে হাতে সাহায্য করছি। আন্টি আপু কে বললো কি রে মা, অনেকদিন তো হয়ে গেলো, কিন্তু এখনো নাতী নাতনীর সুখবর পাচ্ছি না কেনো? কবে যে আল্লাহ আমাকে নাতি নাতনির মুখ দেখাবে।
আমি বাপু কিছু বুঝতে চাই না,
আমার দাঁত থাকতে যতো তারাতাড়ি সম্ভব নাতি নাতনি কে কোলেপিঠে করে বড়ো করতে চাই।
পরে আমার দাঁত না থাকলে ওদের সাথে লজ্জায় একটু হাসতেও পারবো না।
আপু তো লজ্জায় লাল-নীল হতে লাগলো।
আপু তো লজ্জায় লাল-নীল হতে লাগলো।
আমি আন্টির কথাটা কিছুতেই বুঝতে পারছি না, বাচ্চা কী আকাশ থেকে পড়বে , এটা তো সম্পূর্ণ আল্লাহর দান।
হঠাৎ বাসায় কলিং বেল বেজে উঠলো, আমি হুড়মুড়িয়ে গেলাম দরজা খুলতে, দরজা খুলে যা দেখলাম চোখ আমার কপালে।
এ-তো দেখছি খালা মনি। আমি খালা মনি কে জড়িয়ে ধরে চিৎকার দিলাম আপু দেখ কে এসেছে। আপু দৌড়ে এসে খালা মনি কে জড়িয়ে ধরলো।
কিরে মিষ্টি তোকে অনেকদিন পর দেখলাম, তুই তো মিষ্টি থেকে দধি হয়ে গেছিস রে। খালা মনি আপু কে কানে কানে কিছু একটা বললো, আপু তো
লজ্জায় জমে ক্ষীর হতে লাগলো।
আমি খালা মনি কে বললাম, খালা মনি চলো তোমাকে আমার রুমে নিয়ে যাই,অনেক ক্লান্ত লাগছে তোমাকে দেখতে।
-"খালা মনি আন্টির সাথে কোলাকুলি দিয়ে আন্তরিকতার সাথে কথা বলে আমার সাথে উপরে চলে আসলেন। "
আমি খালা মনি কে বললাম বাহ খালা মনি তুমি তো দেখছি আগের চেয়ে আরো ওজন বাড়িয়ে কুস্তীগির মহিলাদের মতো হয়ে গেছো, আমার হবু হাজবেন্ড তো তোমাকে যতো বার দেখবে ততোবার আম্মা বলে বলে বেহুঁশ হয়ে চিপা চাপায় পড়ে থাকবে, মনে হচ্ছে তোমাকে দশহাত দূর থেকে দেখলেও সে আমার শাড়ির আঁচলে এসে লুকাবে।
আচ্ছা শুনো এখন বলো খালুকে নিয়ে আসোনি কেনো?
খালা মনি মুখটা বাঁকিয়ে বললো আর তোর খালু, ঐ বদ লোকটার কথা আর বলিস না, রাতে তো এক কান্ড করে সারাক্ষণ গরুর মতো নাক ডাকে, এই নাক ডাকার শব্দে আমি ঘুমুতে না পেরে পেরে দিন দিন না শুকিয়ে উলটো মোটা হয়ে যাচ্ছি । তুই জানিস, আজ আমি রাগ করে চলে এসেছি, আরো বিশেষ একটা কারণও আছে বটে।
কেনো? খালু আবার কী করলো।
আর বলিস না নতুন করে আরেক মহা জ্বালায় আছি, যেখানে সেখানে গরম বাতাস ছাড়ে। ফ্ল্যাটে তো আমি একা নই, তোর খালুর গরম বাতাসের দূর গন্ধে কাজের মেয়ে গুলো পর্যন্ত ভেগে গেছে। একটার পর একটা ছাড়তেই থাকে। তোর খালুর গরম বাতাসের শব্দে ফ্ল্যাটসহ কেঁপে উঠে,
সবাই ভূমিকম্প বলে বলে খাটের তলায় লুকায়। আমিও প্রথম প্রথম লুকাতাম কিন্তু খাটের চিপায় নয় দরজার চিপায় কারণ আমার এই শরীরটা নিয়ে কী খাটের নিচে যেতে পারি বল।
সারাক্ষণ আতংকে থাকি তোর খালুর গরম বাতাসে কখন খাটসহ ভেঙে নিচে পড়ে হাত-পা ভেঙে পঙ্গু হয়ে থাকি।
তাই আজ চলে আসলাম, মিষ্টির বাসার কথা বললে নিশ্চয় চলে আসতো।জামাই বাড়ি এসে যখন তখন গরম বাতাস ছেড়ে সবার শান্তির ঘুম হারাম করতো।তোরা তো একজন যা পাতলু তোর খালুর গরম বাতাসে তোরা কে কোথায় উড়ে যাস তাঁর ঠিক আছে তখন শুধু শুধু লজ্জা পেতে হতো।
তাই আজ চলে আসলাম, মিষ্টির বাসার কথা বললে নিশ্চয় চলে আসতো।জামাই বাড়ি এসে যখন তখন গরম বাতাস ছেড়ে সবার শান্তির ঘুম হারাম করতো।তোরা তো একজন যা পাতলু তোর খালুর গরম বাতাসে তোরা কে কোথায় উড়ে যাস তাঁর ঠিক আছে তখন শুধু শুধু লজ্জা পেতে হতো।
_____________________
খালা মনি কথা শেষ করে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।খালা মনির কথায় আমি শুধু অবাকই নয়, চরম পর্যায়ে মাথা ঘুরিয়ে খাটে পড়ে গেলাম।
চলবে___________
COMMENTS