romantic dialouge, best songlap, novel, awesome story, love story, romantic story, sad story, sad solution, love solution, poem,
বেখেয়ালি মন--৭ম পর্ব ।
_________________
"আমাকে চুপচাপ থাকতে দেখে খালা বললো, প্রিয়ন্তী তোর আবার কী হলো,তুই কী ভাবছিস এতো? আমি থাকতে তোকে এতো চিন্তা করতে হবে না বুঝলি। তুই হয়তো ভাবছিস দামড়া পাত্র কোথা থেকে জোগাড় করবি তাই-না, এতো চিন্তা করছিস কেনও, দরকার হলে খবরের কাগজে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দেবো, দামড়া পাত্র চাই। ছেলের কোনো সম্পদ না থাকলেও চলবে।"
"তাই বলে দামড়া বলে বিজ্ঞপ্তি দেবে?"
কেনো রে এটা কী একটু কম হয়ে গেলো, তাহলে তুই কী বলতে চাস, দামড়ার জায়গায় বলদ দিতে এটা একটু বেশি হয়ে যাবে না?
___________
খালার কথায় আমি কেশে উঠলাম, যক্ষ্মা রোগীর মতো। খালা বললো, কী হলো বলতো? তুই কী তোর এক ডজন ছেলেমেয়ে নিয়ে চিন্তা করে করে মাথার চুল সব পাকিয়ে ফেলছিস নাকি?
এতো চিন্তা করতে হবেনা বুঝলি। আমাদের তো কোনো ছেলেমেয়ে নাই। তোর খালুর যা আছে এতিমখানায় না দিয়ে তোর ছেলেমেয়েকে দিয়ে দেবো।
আমি খালার কথায় একটু চমকিয়ে উঠলাম, খালাতো আমাকে আস্ত এতিমখানার জননী বানিয়ে দিলো।
আচ্ছা শুন আমি কিন্তু তোর ছেলেমেয়েকে নাম ধরে ডাকতে পারবো না বুঝলি। কারণ এতো নাম কী আমার মনে থাকবে এই বুড়ো বয়সে । আমি ভেবেছি ডিব্বা, ডাব্বা, ট্যাবলেট, ক্যাপসুল এগুলো বলে ডাকবো, কিন্তু নির্দিষ্ট করে ডাকতে পারবো না, টিয়া, ময়না তোতা এগুলোও ডাকতে পারি।
__________
"আমার এবার একটু অভিমান হলো, আমার এক ডজন বাচ্চা বলেই কী খালা মনি ওদের কে এই নামে ডাকবে। তাই অভিমানী স্বরে বললাম, খালা মনি যদি তোমার ভালো লাগে, ইঁদুর, কুকুর,বিড়াল, খবিশ, সাপ,কচ্ছপ, লবণ, মরিচ,, হলুদ,আলু ভর্তা,আম ভর্তা , জাম ভর্তা,পঁচা কাঁঠাল সব সব ডাকতে পারো আমি অনুমতি দিয়ে দিলাম।"
________
এই প্রিয়ন্তী তুই কী আমার উপর রাগ করছিস নাকি, না আমাকে বোকা বানাচ্ছিস? আমি যদি মরিচ, আলু বর্তা বলে ডাকি পরে দেখা যাবে ওরা আমাকে মরিচগুঁড়ো, আলু বর্তা দিয়ে গোসল করিয়ে দিবে।
__________
খালা মনির কথায় দু'চোখে ঘুম নেমে আসলো, খালা মনির মুখে এক ডজন, এক ডজন শুনে আমার মনে হচ্ছে এখন আমার সামনেই এক ডজন ছেলেমেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কেউ বলতে মাম্মাম, খিদে
পেয়েছে,কেউ বলছে মাম্মাম এক নাম্বার করবো,দুই নাম্বার করবো,কেউ বলছে ঘুম পাড়িয়ে দাও,
___________
খালা মনি চিৎকার দিয়ে বললো, কী হলো তোর, তুই কী আজকাল কথা বলতে বলতেও ঘুমিয়ে পড়িস নাকি?
বিয়ের পর বাচ্চা হলে তো, চোখ মেলে মেলে ঘুমিয়ে যাবি,খেতে খেতে ঘুমিয়ে যাবি, বাথরুমেও ঘুমিয়ে যাবি, পরে তো তোকে দরজা ভেঙে ভেঙে বের করতে হবে প্রতিদিন।
ওহ্ খালা মনি ঘুমিয়ে গেলেও চিন্তা নেই, তুমিতো আছো, একশো কেজি ওজনের এই বিরাট হস্তিনী শরীরটা দিয়ে এক ধাক্কা দিলেই তো দরজা ভেঙে গুঁড়ো হয়ে যাবে।
প্রিয়ন্তী তুই আমাকে হস্তিনী বললি, এই বুঝি খালা মনির জন্য তোর আহামরি টান।
"আহা খালা তুমি কী ভেবেছ, আমি তোমাকে অপমান করে হস্তিনী বলেছি। তুমি যে হস্তিনীর মতো বিরাট শরীরটা বানিয়েছ তা আমাদের সাত জন্মের ভাগ্য। তোমার এই হস্তিনী শরীরটা আমার জন্য কতোটা প্লাস পয়েন্ট যদি তুমি জানতে তাহলে লাফিয়ে উঠতে।"
_______
"না বাপু এই বুড়ো বয়সে লাফালে আমার হাত-পা ভেঙে ঘরে শুয়ে-বসে দিন কাটাতে হবে, পরে তোর আর দামরা জামাইয়ের স্পেশাল এক ডজন গুলো মুলো সৈনিকদের দেখতে পাবো না।"
খালা মনি শুনো, বিয়ের পর তুমি তো আমার সাথে পার্মানেন্ট থাকবে, আমার দামড়া জামাই সবসময় তোমার ভয়ে ভয়ে আমার শাড়ির আঁচলে গিঁট্টুর মতো লেগে থাকবে।
আমার কথায় কান ধরে উঠবস করবে। চিন্তা করো ব্যাপারটা কতোটা প্লাস পয়েন্ট আমার জন্য।
বাহ্ প্রিয়ন্তী তোর মাথায় তো বেশ বুদ্ধি আছে, আমি তো মনে করেছি তুই হয়তো বুদ্ধিগুলো কাউকে ধার দিয়ে দিয়েছিস।
আচ্ছা শুন, তুই যে এতোদিন যাবৎ মিষ্টির বাসায় আছিস কেউ কিছু বলবে না?
না খালা মনি সবাই অনেক ভালো। আপুর শ্বাশুড়ি আরো ভালো।
আচ্ছা ভালো হলেই ভালো। শুন, মিষ্টির একটা দেবর আছে যে, দেখতে অনেক মিষ্টি, আমার তো হেব্বি পচন্দ হয়েছে।
ছিহ খালা মনি কী বলো এসব, খালুকে রেখে শেষ পর্যন্ত এই শিশির কে।
কী যা-তা বলছিস, আমি কেনও ওকে আমার জন্য পচন্দ করবো, আমি তো তোর জন্য পচন্দ করেছি, যেমন মিষ্টি তেমন দামড়াও বটে।
ইম্পসিবল কী বলো এসব! আর তুমি কাকে মিষ্টি বলছো, এ হচ্ছে পুরো তিতা করল্লা, বনমানুষ, এই বদের হাড্ডি কে বিয়ে করলে আমার জীবন ছেঁড়া ত্যানা হয়ে যাবে। আর একে দামড়া বলছো এর মতো সুপার ডুপার হিট বজ্জাত আর একটা আছে কিনা সন্দেহ।
প্রিয়ন্তী মা তুই একটু ঠান্ডা হো, আমার তো মনে হচ্ছে তোর চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে, মাথা দিয়ে ধোঁয়া উড়ছে। যে কেউ এখন সামনে থাকলে, পুড়িয়ে কয়লা করে ফেলতিস। আর তুই কী জানিস তিতা করল্লা ডায়াবেটিসের জন্য কতোটা উপকারী। আমার কী মনে হচ্ছে জানিস, মিষ্টির দেবর তিতা দামরাকে বিয়ে করলে তোর ডায়বেটিসও হবে না।
আচ্ছা শোন তোর এতো কিছু বোঝবার দরকার নেই, ছোট মানুষ, বিয়ে-শাদি আল্লাহর হাতে, বিয়ে নিয়ে তোকে চিন্তা করতে হবেনা। যা করার আমিই করবো। এখন ফোন রাখ তিন হালি বাচ্চার মা হতে হবে তো, দেখবি তোর তিন হালি ছেলেমেয়েই পুনরায় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ জয় করতে পারবে।প্রতি বছর একটা করে বাচ্চা নিবি বুঝলি,যতো বাচ্চা নিবি তোর জামাই ততো তোর হাতের মুঠোয় থাকবে।
আরে না বোকা মেয়ে তোর খালু ঘুমলে কী তাঁর কোনো কিছু মনে থাকে, সে যে পৃথিবীতে আছে তা-ও ভুলে যায়। শুতে না শুতে মিচকে বিড়ালের মতো ঘুম, আর ঘুমানোর পর এতো এতো বিকট শব্দে নাক ডাকে, পুরো বিল্ডিংসহ কেঁপে উঠে।কতো ভাড়াটিয়া যে ভেগেছে তার কোনো হিসেব নেই।
আমি খালার কথা শুনে কয়েক মিনিট হ্যাং মেরে বসে রইলাম।
শিশির ভাই পেছন থেকে বলে উঠলো কী ব্যাপার প্রিয়ন্তী ম্যাম আপনাকে কী কম্পিউটারে ঢুকিয়ে রিস্টার্ট দিতে হবে নাকি? এমন হ্যাং মেরে বসে আছেন যেনো আপনার বয়ফ্রেন্ড আপনাকে ধোঁকা দিয়ে পোকা ক্ষেতে গেছে।
নাকি আসলেই ধোঁকা খেয়েছেন বলুন? আপনাদের মেয়েদের তো এক বদঅভ্যেস ধোঁকা খেলে সুইসাইট করে ফেলেন, করবেন নাকি, চলেন আমি আপনাকে হেল্প করি। কিন্তু শুনুন আগে মরার আগে একটু মেকআপ করে আসুন, আপনার ছবি নিউজপেপারে ছাপাবে, জল্লাদ আংকেল আপনার প্রতিটি অংশ কেটেকুটে ফেলবে। আমি বুঝি না মেয়ে গুলো কেনও এতো ফালতু কাজ করে, দুনিয়াতে কী বয়ফ্রেন্ড, বা হাজবেন্ড দুঃখ দিলে সুখ পাওয়ার কোনো মাধ্যম নেই, মা - বাবা নেই।
ওহ্ তাই বুঝি, প্রিয়ন্তী ম্যাম আপনি বুঝি আমার বাথরুমে উঁকিঝুঁকিও দেন। আজকাল, বাথরুমে আবার অন্য কিছুর দিকে নজর দেননি তো আবার। পরে কিন্তু আমার ইজ্জত ফালুদা হয়ে যাবে।
আমার ইজ্জতের কিছু হলে দায়ভার কিন্তু তোমাকেই নিতে হবে।
আমি এক ঢোক গিলে বললাম, নাহ এমন কিছুই আমি দেখি নি আমি তো জাস্ট মজা করে বলছি।
প্রিয়ন্তী জান আমার, বউ পাখি হিসেবে আমি তোমাকে চাই, তুমি কী আমার গোধূলির আকাশ হবে, যে আকাশে আমি আমার ভালোবাসার ছোঁয়া লাগাবো, তোমার স্বপ্নে শুধু আমিই থাকবো। ময়নাপাখির মতো হৃদয়মাঝে রাখবো, কোনো কষ্ট পেতে দেবো না।
শিশির ভাইয়ের কথা শুনে আমার যেনো মাথাটা ভোঁভোঁ করে ঘুরছে, চোখে যেনো রঙিন চশমা লাগিয়েছি, শরীরটা ঝিম ঝিম করছে, যে কোনো সময় শিশির ভাইয়ের গায়ে পড়ে যেতে পারি। এই মানুষটাকে কেনও আজ এতো মায়াবী লাগছে নিজেও বুঝি না। ধুসর রঙটা আমার এতোটাই প্রিয়, নাকি এই মানুষটা আজ ধুসর রঙের শার্ট পড়েছে দেখেই এতোটা সুন্দর লাগছে।
কী ব্যাপার সোনা বউ কিছু তো বলো? চাঁদনী রাতে নিরালা নির্জন বাতাসে চাঁদের মনমাতানো সৌরভে তোমাকে দেখে আমার চক্ষু তৃষ্ণা মিটবে, আমাদের হৃদয় ছোয়া ভালোবাসা দেখে চাঁদের বুড়ী লজ্জায় মুখ লুকাবে।
তুমি লজ্জা পেয়ে বলবে ইস!লজ্জায় দু'হাতে মুখ ঢেকে ফেলবে।
তোমার কোমল হাতখানা সরিয়ে, তোমাকে ভেজা চুমুতে ভরিয়ে দেবো।
যদি তুমি রাজি তাইলে ডাকবো কাজী।
তোমার হৃদয়ের সবটুকু শীতল পরশ আমি পেতে চাই।
একবার বলো রাজি সোনা বউ।
লেখাঃ--- আফরিন ইভা
_________________
"আমাকে চুপচাপ থাকতে দেখে খালা বললো, প্রিয়ন্তী তোর আবার কী হলো,তুই কী ভাবছিস এতো? আমি থাকতে তোকে এতো চিন্তা করতে হবে না বুঝলি। তুই হয়তো ভাবছিস দামড়া পাত্র কোথা থেকে জোগাড় করবি তাই-না, এতো চিন্তা করছিস কেনও, দরকার হলে খবরের কাগজে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দেবো, দামড়া পাত্র চাই। ছেলের কোনো সম্পদ না থাকলেও চলবে।"
"তাই বলে দামড়া বলে বিজ্ঞপ্তি দেবে?"
কেনো রে এটা কী একটু কম হয়ে গেলো, তাহলে তুই কী বলতে চাস, দামড়ার জায়গায় বলদ দিতে এটা একটু বেশি হয়ে যাবে না?
___________
খালার কথায় আমি কেশে উঠলাম, যক্ষ্মা রোগীর মতো। খালা বললো, কী হলো বলতো? তুই কী তোর এক ডজন ছেলেমেয়ে নিয়ে চিন্তা করে করে মাথার চুল সব পাকিয়ে ফেলছিস নাকি?
এতো চিন্তা করতে হবেনা বুঝলি। আমাদের তো কোনো ছেলেমেয়ে নাই। তোর খালুর যা আছে এতিমখানায় না দিয়ে তোর ছেলেমেয়েকে দিয়ে দেবো।
আমি খালার কথায় একটু চমকিয়ে উঠলাম, খালাতো আমাকে আস্ত এতিমখানার জননী বানিয়ে দিলো।
আচ্ছা শুন আমি কিন্তু তোর ছেলেমেয়েকে নাম ধরে ডাকতে পারবো না বুঝলি। কারণ এতো নাম কী আমার মনে থাকবে এই বুড়ো বয়সে । আমি ভেবেছি ডিব্বা, ডাব্বা, ট্যাবলেট, ক্যাপসুল এগুলো বলে ডাকবো, কিন্তু নির্দিষ্ট করে ডাকতে পারবো না, টিয়া, ময়না তোতা এগুলোও ডাকতে পারি।
__________
"আমার এবার একটু অভিমান হলো, আমার এক ডজন বাচ্চা বলেই কী খালা মনি ওদের কে এই নামে ডাকবে। তাই অভিমানী স্বরে বললাম, খালা মনি যদি তোমার ভালো লাগে, ইঁদুর, কুকুর,বিড়াল, খবিশ, সাপ,কচ্ছপ, লবণ, মরিচ,, হলুদ,আলু ভর্তা,আম ভর্তা , জাম ভর্তা,পঁচা কাঁঠাল সব সব ডাকতে পারো আমি অনুমতি দিয়ে দিলাম।"
________
এই প্রিয়ন্তী তুই কী আমার উপর রাগ করছিস নাকি, না আমাকে বোকা বানাচ্ছিস? আমি যদি মরিচ, আলু বর্তা বলে ডাকি পরে দেখা যাবে ওরা আমাকে মরিচগুঁড়ো, আলু বর্তা দিয়ে গোসল করিয়ে দিবে।
না বাপু আমি রিস্ক নেবো না, তুই যেমন বানর তোর পেটে হবেও বানর ছানা। শুন, এক ডজন ছেলেমেয়ে নিলে যেমন সুবিধা তেমন অসুবিধাও আছে, যেমন, ওদেরকে নিয়ে কোথাও দাওয়াত খেতে গেলি, গুনে গুনে নিতে হবে, আবার গুনে গুনে আনতে হবে,স্কুলে দিয়ে আসতে গেলেও আবার এক,দুই গুনে আনতে হবে, সারাক্ষণ এক,দুই গুনতেই থাকবি।
এতো কষ্ট করে নাম না ঠিক করে, ওদের নাম এক থেকে বারো পর্যন্ত রেখে দিস।
এতো কষ্ট করে নাম না ঠিক করে, ওদের নাম এক থেকে বারো পর্যন্ত রেখে দিস।
__________
খালা মনির কথায় দু'চোখে ঘুম নেমে আসলো, খালা মনির মুখে এক ডজন, এক ডজন শুনে আমার মনে হচ্ছে এখন আমার সামনেই এক ডজন ছেলেমেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কেউ বলতে মাম্মাম, খিদে
পেয়েছে,কেউ বলছে মাম্মাম এক নাম্বার করবো,দুই নাম্বার করবো,কেউ বলছে ঘুম পাড়িয়ে দাও,
কেউ বলছে কোলে নাও, ওহ্ আল্লাহ এখনতো মনে হচ্ছে আমাকেও দেবীর মতো চৌদ্দ হাত বের করতে হবে।
___________
খালা মনি চিৎকার দিয়ে বললো, কী হলো তোর, তুই কী আজকাল কথা বলতে বলতেও ঘুমিয়ে পড়িস নাকি?
বিয়ের পর বাচ্চা হলে তো, চোখ মেলে মেলে ঘুমিয়ে যাবি,খেতে খেতে ঘুমিয়ে যাবি, বাথরুমেও ঘুমিয়ে যাবি, পরে তো তোকে দরজা ভেঙে ভেঙে বের করতে হবে প্রতিদিন।
ওহ্ খালা মনি ঘুমিয়ে গেলেও চিন্তা নেই, তুমিতো আছো, একশো কেজি ওজনের এই বিরাট হস্তিনী শরীরটা দিয়ে এক ধাক্কা দিলেই তো দরজা ভেঙে গুঁড়ো হয়ে যাবে।
প্রিয়ন্তী তুই আমাকে হস্তিনী বললি, এই বুঝি খালা মনির জন্য তোর আহামরি টান।
"আহা খালা তুমি কী ভেবেছ, আমি তোমাকে অপমান করে হস্তিনী বলেছি। তুমি যে হস্তিনীর মতো বিরাট শরীরটা বানিয়েছ তা আমাদের সাত জন্মের ভাগ্য। তোমার এই হস্তিনী শরীরটা আমার জন্য কতোটা প্লাস পয়েন্ট যদি তুমি জানতে তাহলে লাফিয়ে উঠতে।"
_______
"না বাপু এই বুড়ো বয়সে লাফালে আমার হাত-পা ভেঙে ঘরে শুয়ে-বসে দিন কাটাতে হবে, পরে তোর আর দামরা জামাইয়ের স্পেশাল এক ডজন গুলো মুলো সৈনিকদের দেখতে পাবো না।"
খালা মনি শুনো, বিয়ের পর তুমি তো আমার সাথে পার্মানেন্ট থাকবে, আমার দামড়া জামাই সবসময় তোমার ভয়ে ভয়ে আমার শাড়ির আঁচলে গিঁট্টুর মতো লেগে থাকবে।
আমার কথায় কান ধরে উঠবস করবে। চিন্তা করো ব্যাপারটা কতোটা প্লাস পয়েন্ট আমার জন্য।
বাহ্ প্রিয়ন্তী তোর মাথায় তো বেশ বুদ্ধি আছে, আমি তো মনে করেছি তুই হয়তো বুদ্ধিগুলো কাউকে ধার দিয়ে দিয়েছিস।
আচ্ছা শুন, তুই যে এতোদিন যাবৎ মিষ্টির বাসায় আছিস কেউ কিছু বলবে না?
না খালা মনি সবাই অনেক ভালো। আপুর শ্বাশুড়ি আরো ভালো।
আচ্ছা ভালো হলেই ভালো। শুন, মিষ্টির একটা দেবর আছে যে, দেখতে অনেক মিষ্টি, আমার তো হেব্বি পচন্দ হয়েছে।
ছিহ খালা মনি কী বলো এসব, খালুকে রেখে শেষ পর্যন্ত এই শিশির কে।
কী যা-তা বলছিস, আমি কেনও ওকে আমার জন্য পচন্দ করবো, আমি তো তোর জন্য পচন্দ করেছি, যেমন মিষ্টি তেমন দামড়াও বটে।
ইম্পসিবল কী বলো এসব! আর তুমি কাকে মিষ্টি বলছো, এ হচ্ছে পুরো তিতা করল্লা, বনমানুষ, এই বদের হাড্ডি কে বিয়ে করলে আমার জীবন ছেঁড়া ত্যানা হয়ে যাবে। আর একে দামড়া বলছো এর মতো সুপার ডুপার হিট বজ্জাত আর একটা আছে কিনা সন্দেহ।
প্রিয়ন্তী মা তুই একটু ঠান্ডা হো, আমার তো মনে হচ্ছে তোর চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে, মাথা দিয়ে ধোঁয়া উড়ছে। যে কেউ এখন সামনে থাকলে, পুড়িয়ে কয়লা করে ফেলতিস। আর তুই কী জানিস তিতা করল্লা ডায়াবেটিসের জন্য কতোটা উপকারী। আমার কী মনে হচ্ছে জানিস, মিষ্টির দেবর তিতা দামরাকে বিয়ে করলে তোর ডায়বেটিসও হবে না।
আচ্ছা শোন তোর এতো কিছু বোঝবার দরকার নেই, ছোট মানুষ, বিয়ে-শাদি আল্লাহর হাতে, বিয়ে নিয়ে তোকে চিন্তা করতে হবেনা। যা করার আমিই করবো। এখন ফোন রাখ তিন হালি বাচ্চার মা হতে হবে তো, দেখবি তোর তিন হালি ছেলেমেয়েই পুনরায় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ জয় করতে পারবে।প্রতি বছর একটা করে বাচ্চা নিবি বুঝলি,যতো বাচ্চা নিবি তোর জামাই ততো তোর হাতের মুঠোয় থাকবে।
হাতের মুঠোয় নিয়ে, তুই ওকে মুরগি ডান্স,পাগলু ডান্স,ময়ূর ডান্সও করাতে পারবি।
হাতের কাজ শেষ করে তারাতাড়ি ঘুমাতে হবে রে। পরে তোর খালুর জন্য ঘুমাতে পারবোনা।
কী বলো খালা মনি, খালুর বুঝি এই বুড়ো বয়সেও প্রেম প্রেম পায়।
হাতের কাজ শেষ করে তারাতাড়ি ঘুমাতে হবে রে। পরে তোর খালুর জন্য ঘুমাতে পারবোনা।
কী বলো খালা মনি, খালুর বুঝি এই বুড়ো বয়সেও প্রেম প্রেম পায়।
আরে না বোকা মেয়ে তোর খালু ঘুমলে কী তাঁর কোনো কিছু মনে থাকে, সে যে পৃথিবীতে আছে তা-ও ভুলে যায়। শুতে না শুতে মিচকে বিড়ালের মতো ঘুম, আর ঘুমানোর পর এতো এতো বিকট শব্দে নাক ডাকে, পুরো বিল্ডিংসহ কেঁপে উঠে।কতো ভাড়াটিয়া যে ভেগেছে তার কোনো হিসেব নেই।
তাই আমি-ই তোর খালুর আগে আগে ঘুমিয়ে পড়ি।আমার কাছে পৃথিবীর সবথেকে অসহ্যকর হলো তোর খালুর নাক ডাকা। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে তোর খালুর নাকে ময়দা গুলে লাগিয়ে দেই,নয়তো সেপ্টিপিন দিয়ে আটকিয়ে দেই। ঠিক আছে ভালো থাক বলে ফোনটা কেটে দিলো।
আমি খালার কথা শুনে কয়েক মিনিট হ্যাং মেরে বসে রইলাম।
শিশির ভাই পেছন থেকে বলে উঠলো কী ব্যাপার প্রিয়ন্তী ম্যাম আপনাকে কী কম্পিউটারে ঢুকিয়ে রিস্টার্ট দিতে হবে নাকি? এমন হ্যাং মেরে বসে আছেন যেনো আপনার বয়ফ্রেন্ড আপনাকে ধোঁকা দিয়ে পোকা ক্ষেতে গেছে।
নাকি আসলেই ধোঁকা খেয়েছেন বলুন? আপনাদের মেয়েদের তো এক বদঅভ্যেস ধোঁকা খেলে সুইসাইট করে ফেলেন, করবেন নাকি, চলেন আমি আপনাকে হেল্প করি। কিন্তু শুনুন আগে মরার আগে একটু মেকআপ করে আসুন, আপনার ছবি নিউজপেপারে ছাপাবে, জল্লাদ আংকেল আপনার প্রতিটি অংশ কেটেকুটে ফেলবে। আমি বুঝি না মেয়ে গুলো কেনও এতো ফালতু কাজ করে, দুনিয়াতে কী বয়ফ্রেন্ড, বা হাজবেন্ড দুঃখ দিলে সুখ পাওয়ার কোনো মাধ্যম নেই, মা - বাবা নেই।
প্রিয়জন কী শুধু বয়ফ্রেন্ড আর হাজবেন্ড কে বুঝায়। তারা প্রিয়জনকে না হয় অন্তরের গভীর ভালোবাসায় লুকিয়ে রেখে, মা- বাবা ভাইবোনদের নিয়ে বাকি জীবনটা পার করে দিলো।আমারতো ইচ্ছে করে মেয়েগুলোকে ব্লেড দিয়ে কেটে লবণ,মরিচ লাগিয়ে দেই, এবার বুঝ আত্মহত্যার স্বাদ কেমন?
আমিতো অবাক এই কাঠবিড়াল টারও বুঝি রাগ আছে আজ না দেখলে তো বুঝতেই পারতামনা।
আমিতো অবাক এই কাঠবিড়াল টারও বুঝি রাগ আছে আজ না দেখলে তো বুঝতেই পারতামনা।
এমন ভাব নিলো যেনো আমাকে কামড়ে দিবে। ওরে বাবা এই লোককে থামানো উচিত নয়তো যেকোনো সময় অঘটন ঘটিয়ে ফেলতে পারে।
শিশির ভাই কী যে বলেন, আমি কেনও মরতে যাবো আমার এতো শখ নেই মরার। আর বিশেষ করে আপনার বিয়ে খাওয়া ছাড়া মরবো না। যদি কোনো এক্সিডেন্টে মারাও যাই পরে দেখা যাবে, আপনার বিয়ে খাওয়ার জন্য পেত্নী হয়ে চলে এসেছি আপনার বৌভাতের রোস্ট খাওয়ার জন্য।
শিশির ভাই কী যে বলেন, আমি কেনও মরতে যাবো আমার এতো শখ নেই মরার। আর বিশেষ করে আপনার বিয়ে খাওয়া ছাড়া মরবো না। যদি কোনো এক্সিডেন্টে মারাও যাই পরে দেখা যাবে, আপনার বিয়ে খাওয়ার জন্য পেত্নী হয়ে চলে এসেছি আপনার বৌভাতের রোস্ট খাওয়ার জন্য।
পরে আপনার বউ বেহুঁশ হয়ে যাবে আমার খাওয়া দেখে, আমি চাই না, আপনি কিছু করার আগেই বেচারি বেহুঁশ হয়ে যাক। ( দুষ্টু হাঁসি দিয়ে)
আমি তো আপনার দুঃখটা বুঝি, আপনি বিয়ে করার জন্য কতোটা পাগল হয়ে বাথরুমে গিয়ে দুঃখের গান করেন।
আমি তো আপনার দুঃখটা বুঝি, আপনি বিয়ে করার জন্য কতোটা পাগল হয়ে বাথরুমে গিয়ে দুঃখের গান করেন।
ওহ্ তাই বুঝি, প্রিয়ন্তী ম্যাম আপনি বুঝি আমার বাথরুমে উঁকিঝুঁকিও দেন। আজকাল, বাথরুমে আবার অন্য কিছুর দিকে নজর দেননি তো আবার। পরে কিন্তু আমার ইজ্জত ফালুদা হয়ে যাবে।
আমার ইজ্জতের কিছু হলে দায়ভার কিন্তু তোমাকেই নিতে হবে।
আমি এক ঢোক গিলে বললাম, নাহ এমন কিছুই আমি দেখি নি আমি তো জাস্ট মজা করে বলছি।
প্রিয়ন্তী জান আমার, বউ পাখি হিসেবে আমি তোমাকে চাই, তুমি কী আমার গোধূলির আকাশ হবে, যে আকাশে আমি আমার ভালোবাসার ছোঁয়া লাগাবো, তোমার স্বপ্নে শুধু আমিই থাকবো। ময়নাপাখির মতো হৃদয়মাঝে রাখবো, কোনো কষ্ট পেতে দেবো না।
শিশির ভাইয়ের কথা শুনে আমার যেনো মাথাটা ভোঁভোঁ করে ঘুরছে, চোখে যেনো রঙিন চশমা লাগিয়েছি, শরীরটা ঝিম ঝিম করছে, যে কোনো সময় শিশির ভাইয়ের গায়ে পড়ে যেতে পারি। এই মানুষটাকে কেনও আজ এতো মায়াবী লাগছে নিজেও বুঝি না। ধুসর রঙটা আমার এতোটাই প্রিয়, নাকি এই মানুষটা আজ ধুসর রঙের শার্ট পড়েছে দেখেই এতোটা সুন্দর লাগছে।
শিশির ভাই এমনিতেও আহামরি সুন্দর, যে কোনো মেয়ের প্রেমিক পুরুষ হিসেবে তিনি একদম পারফেক্ট । এখন আমারি ইচ্ছে করছে এই মানুষ টার হৃদয়ের শীতল স্পর্শ পেয়ে আমার উত্তপ্ত লোহিত হৃদয়কে শীতল করতে।
কী ব্যাপার সোনা বউ কিছু তো বলো? চাঁদনী রাতে নিরালা নির্জন বাতাসে চাঁদের মনমাতানো সৌরভে তোমাকে দেখে আমার চক্ষু তৃষ্ণা মিটবে, আমাদের হৃদয় ছোয়া ভালোবাসা দেখে চাঁদের বুড়ী লজ্জায় মুখ লুকাবে।
তুমি লজ্জা পেয়ে বলবে ইস!লজ্জায় দু'হাতে মুখ ঢেকে ফেলবে।
তোমার কোমল হাতখানা সরিয়ে, তোমাকে ভেজা চুমুতে ভরিয়ে দেবো।
যদি তুমি রাজি তাইলে ডাকবো কাজী।
তোমার হৃদয়ের সবটুকু শীতল পরশ আমি পেতে চাই।
একবার বলো রাজি সোনা বউ।
চলবে _______
COMMENTS