প্রেমের গল্পঃ- দৃষ্টির আড়ালে কে তুমি, @GOLPO BLOG, bangla popular golpo, bangla love story, sad story, sad poem, current love story, new love story,
গল্প: দৃষ্টির আড়ালে কে তুমি.?
--প্রথম পর্বলেখকঃ আতিকুল ইসলাম
মেয়েটার বয়স খুবই কম। সবে মাত্র চৌদ্দ বছরে পা দিয়েছে। নাম নিলিমা। ক্লাস নাইনে ওঠেছে মাত্র। মধ্যবিত্ত বাবার একমাত্র রাজকন্যা। দেখতেও বেশ সুন্দর। বাবার একমাত্র মেয়ে হওয়ায় আদর ও ভালোবাসা পান ঠিক রাজকন্যার মতোই। যেমন বাবার আদরের রাজকন্যা তেমনি পড়াশোনায় খুব ভালো আর দুষ্টু প্রকৃতির।
প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার সময় হলে তার বান্ধবীরা তাকে নিতে আসে। তারা সবাই একসাথে গল্প-গুজব করতে করতে স্কুলে পৌছায়। কখনোই পড়াশোনা বা স্কুল ফাকি দিতে চায়না সে। একদিন কোনো এক কারনে তার স্কুলে ক্লাস চলাকালীন সময়ে ভালো লাগছিলো না। সময়টা ঠিক দুপুর বেলা- স্যারের অনুমতি নিয়ে নিলিমা বাসার দিকে রওয়ানা দিল একা একা।
বাজারের সামনে আসতেই দোকানে গরম গরম ছমুচা ও ডালপুরি দেখতে পেল সে। নিলিমা'র আবার ডালপুরির দিকে ভিষন লোভ। নিলিমা তখন ব্যাগ থেকে টাকা বের করে কয়েকটা ছমুচা আর ডালপুরি কিনে নিল। পুরিগুলো অনেকটা গরম হওয়ার কারনে নিলিমা সেগুলো ব্যাগে না নিয়ে হাতে রেখেই বাসার দিকে হাটা শুরু করল। খানিকটা পথ যাওয়ার পর একটু নির্জন জনশূন্য রাস্তায় আসে নিলিমা। ঠিক তখনই হঠাৎ নিলিমা'র হাত ফসকে ডালপুরির পুটলিটা মাটিতে পড়ে গেলো।
নিলিমা তারাতারি পুটলিটা তুলতে গেল ঠিক তখনই দেখলো কালো কুচকুচে একটা কুকুর নিলিমা'র হাতে নেয়া পুটলিটার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে। বিষয়টা নিলিমা দেখলেও তেমন একটা গুরুত্ব দেয়নি। স্বাভাবিক ভাবেই নিলিমা বাসায় চলে গেল পুড়িগুলো নিয়ে। বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলিমা ডালপুরির পেকেট'টা হাতে নিল। কিছু না ভেবেই নিলিমা পুড়ি খেতে শুরু করলো। খাওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকে নিলিমা'র হালকা হালকা কেমন যেন অস্থির লাগছিলো।
নিলিমা তখন কিছু না বুঝার ভান করে বাসার পাশে বাগানের দিকে গেলো একটু ঘুরার জন্য। নানান রকম ফুলে ভরে আছে বাগান। গোলাপ,জবা,বেলি, রজনিগন্ধা,দুর্বা,সূর্যমুখী আরো অনেক রকমের নাম না জানা অজানা সব ফুলের গাছ। মাঝেমাঝে দু-চারটি ফলের গাছও রয়েছে বাগানে। হঠাৎ বেলিফুল গাছটার দিকে নজর গেলো নিলিমা'র।
বেলিফুল গাছটার কাছে যেতেই নিলিমা দেখতে পেল সেই কালো কুচকুচে কুকুরটা মাটিতে বসে তার দিকে তাকিয়ে আছে। নিলিমা অবাক হয়ে গেলো। এটা তো ঐ কুকুরটা যাকে সে রাস্তার পাশে দেখেছে। নিলিমা কুকুরটার দিকে তাকিয়ে কি যেন ভাবছে ঠিক তখনই পাশে কিসের যেন একটা আওয়াজ হলো। নিলিমা পাশে তাকিয়ে দেখলো কেউ নেই সেখানে। নিলিমা আবার সামনে তাকালো। দেখে কুকুরটা সেখানে নেই।
নিলিমা আশেপাশে তাকালো কোথাও সে কুকুরটাকে দেখতে পেলোনা। নিলিমা অবাক হয়ে গেল। কিছুটা ভয়ও পেল নিলিমা। কারন এত তারাতারি কুকুরটা কিভাবে এখান থেকে দুরে যেতে পারে? বাগানের চারপাশে তো কোথাও জঙ্গল বা ঘন বন নেই। তাহলে কুকুরটা গেল কোথায়? এসব ভাবতে ভাবতে নিলিমা বাসায় চলে আসলো। কাউকে কিছু বলল না নিলিমা।
রাতে বাবা মা'র সাথে ডিনার শেষ করে নিলিমা নিজের রুমে চলে গেল। শুবার আগে নিলিমা তার বাকি কাজগুলো সেরে ঘুমিয়ে পড়লো। রাত প্রায় বার'টার কাছাকাছি। কুকুর ডাকার মতো ভয়ংকর একটা আওয়াজে নিলিমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। রুমের ভেতরে তখন ঘুটঘুটে অন্ধকার। অন্ধকার থেকে নিলিমা তখন একটা সুন্দর কণ্ঠের আওয়াজ শুনতে পেলো।
-> নিলিমা তুমি ঘুমাচ্ছো। আমি যে ঘুমাতে পারছিনা নিলিমা। অনেক সাধনার পর তোমাকে পেয়েছি আমি। আর কখনো যেতে দেবোনা তোমায়। এখন থেকে সর্বদা আমি তোমার পাশে থাকবো।
ঠিক এমন সময়ই টেবিলের ওপর থেকে কিছু একটা মাটিতে পরার আওয়াজ হলো। নিলিমা থমকে গেলো। সারা রুম হালকা আলোয় আলোকিত হয়ে গেলো কারন রুমে আগে থেকেই ডিম লাইট জ্বালানো ছিল।
নিলিমা শুয়া থেকে ওঠে বসে পরলো।
নিলিমা ভয়ে থরথর করে কাপতে শুরু করলো।
নিলিমা কাপা শরীর নিয়ে বসে আছে আর ভাবছে কারেন্ট তো যায়নি তাহলে রুম অন্ধকার হলো কি করে? আর দরজাও তো লক করা কেউ রুমে আসার সুযোগও নেই। তাহলে কে এতক্ষন কথা বলল। তার মানে এতক্ষন নিলিমা স্বপ্ন দেখেছে? না এটাতো স্বপ্ন হতে পারেনা। তাহলে কি ছিলো এটা? আর এমন অজানা অচেনা কণ্ঠই বা কার? কে তাকে এতক্ষন এইসব কিছু বলেছে। কোনো আত্বা-টাত্বা নয়তো!
আত্বার কথা মনে পরায় নিলিমা আরো ভয় পেতে লাগলো। নিলিমা ভয়ে ভয়ে আবার শুয়ে পড়লো ঘুমানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু নিলিমার ঘুম আসতে চাইছেনা। সমস্ত ভাবনা যেন নিলিমা'র মাথায় চড়ে বসেছে।
এভাবে কিছুক্ষন ভাবতে ভাবতে কখন যেন নিলিমা'র দু-চোখের পাতা এক হয়ে গেলো নিলিমা তা টেরই পেলোনা।
সকাল বেলা নিলিমা ঘুম থেকে ওঠে তার মাথার কাছে থাকা বালিশের নিচে একটা চিরকুট পেল। নিলিমা অবাক হয়ে চিরকুটটা হাতে নিল। নিলিমা চিরকুটটা খুলে দেখে ভেতরে তিনটে বেলিফুল। বেলিফুলের গন্ধে যেন নিলিমা'র অন্য রকম এক অনুভূতি কাজ করতে লাগলো। পাশেই লিখা ছিলো-
-> প্রিয় নিলিমা, তোমায় পেয়ে আমি ধন্য।
নিলিমা লিখাটা দেখে আরো অবাক হলো। কে হতে পারে এটা? কে সে? তার কাছে কি চায় সে?
এসব ভাবতে ভাবতে নিলিমা'র স্কুলের সময় হয়ে এলো। নিলিমা তারাতারি করে ফ্রেশ হয়ে স্কুলে রওয়ানা হলো.......
চলবে........
( বিঃদ্রঃ গল্পটি পুরোই কাল্পনিক। বাস্তবের সাথে এর কোনো মিল নেই। শুধু মাত্র আপনাদের আনন্দ দেবার জন্যই গল্পটি লিখা )
ধন্যবাদান্তেঃ-(LOVE BLOG)
মওদুদ আহমেদ মধু
COMMENTS